মানুষের আপাত নিরীহ জীবন যে কখন কীভাবে বদলে যায় তা বোধহয় অনুমান করাই শক্ত। নিপাট শান্ত-শিষ্ট ছেলে আমি। কখনও রোমে গিয়েছি, কখনও ভাটিক্যান তো কখনও শতাব্দী প্রাচীন লাইব্রেরিতে। এতদূর অবধি হয়তো ঠিকই ছিল, কিন্তু কী কুক্ষণে যে আমার এক ইহুদী সহপাঠীর সঙ্গে জেরুজালেম ঘুরতে গেলাম!
পোপ প্রথম গ্রেগরি ‘মেরী অফ বেথানী’কে এক করে দিলেন ‘মেরী অফ ম্যাগডেলা’ অর্থাৎ মেরী ম্যাগডালেনের সঙ্গে। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে এই কাজ করেছিলেন নাকি নিজের অজ্ঞতার কারণে, তা অবশ্য সুস্পষ্ট নয়। ৫৯১ খ্রিস্টাব্দের পর থেকেই খ্রিস্টানদের মধ্যে এই বিশ্বাস প্রবল হয়ে উঠল যে মেরী ম্যাগডালেন আসলেই ছিলেন একজন ‘প্রস্টিটিউট’। আগামী পনেরোটা শতাব্দী ধরে চার্চ মেরী ম্যাগডালেন সম্পর্কে এই নির্দেশ বহাল রাখল।
মেরি ম্যাগডালেন যদি খ্রিস্টান ধর্মের প্রকৃত স্থপতি হন, তাহলে সেখানে প্রভু যিশুর ভূমিকা কি? আমার মাথাটা গেল বিগড়ে। শুরু হল খোঁজ। সত্যের খোঁজ।
বছর খানেক আগেই এক মহিলা পাদ্রির থেকে জানলাম এক ভদ্রলোকের কথা। সিলভার ডন গ্যারি। লোকটি নাকি একসময় এই সব নিয়ে বিস্তর পড়াশোনা করে অনেক কিছু জেনেছিলেন। কিন্তু পুরাতনপন্থী চার্চ এসব ভালো চোখে নেয়নি। দুর্বৃত্তরা তার বাড়ি আগুন ধরিয়ে দেয়। তাঁর দশ বছরের গবেষণা, তথ্য-প্রমাণ ছাড়াও তাঁর তিন বছরের কন্যাও সেই দুর্ঘটনায় মারা যায়। তারপর থেকে গ্যারি কারো সঙ্গেই দেখা করেন না, কথাও বলেন না। গত একবছর ধরে বিভিন্ন অছিলায় বাজার থেকে গির্জা তাঁর পিছু নিয়েছি। জানি, হয়তো আবারও একবার গ্যারি আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন। তবু চেষ্টা আমি করে যাবই। কে বলতে পারে আজকে রাতেই হয়তো গ্যারি আমাকে বলে দিলেন সেই সত্য যার খোঁজে আমি গত দুই বছর নাওয়া-খাওয়া ভুলে দৌড়ে বেড়াচ্ছি।
এপ্রিল মাসে আসছে অরণ্যমন প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত লেখক বিশ্বজিৎ সাহা রচিত গবেষণা গ্রন্থ ‘ম্যাগডালেন’ বইটির নির্বাচিত কিছু অধ্যায় অবলম্বনে বিনির্মাণ করা আমাদের চার পর্বের অনুষ্ঠান। প্রভু যিশু নিজের আত্মাহুতির মাধ্যমে সারা বিশ্বকে শিখিয়ে গিয়েছিলেন প্রেম, ভালোবাসা ও ক্ষমার শিক্ষা। প্রায় দুইহাজার বছর আগে তাঁর দেখানো পথই আজ পৃথিবীর এক চতুর্থাংশ মানুষের ধর্ম বিশ্বাস। কী হবে সেই ধর্মবিশ্বাসের ভিত্তিটাই যদি নড়ে যায়? সত্যিই কি প্রভু যিশুই খ্রিস্টান ধর্মের প্রবর্তক নাকি নেপথ্যে আছেন অন্য কেউ? চার পর্বের বিশেষ অনুষ্ঠান নিয়ে টিম Clock Tower আসছে এই গুড ফ্রাইডেতে। এক্ষুনি আমাদের পডকাস্ট বা ইউটিউব চ্যানেল ফলো করে সঙ্গে থাকুক আর জানুন এমন এক সত্য যা বদলে দিতে পারে পৃথিবীর ইতিহাস ।